লালমোহনের মুসলিমিয়া দাঃ মাদ্রাসার সুপার কামাল উদ্দিনের দূর্নীতি রুখবে কে? সুপারের দূর্নীতিতে অসহায় শিক্ষা অফিসার

লালমোহন বিডিনিউজ ,ভোলা দঃ প্রতিনিধি :ভোলার লালমোহনে মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রধানের অব্যাহত দূর্নীতিতে অসহায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ।
জানা যায়, উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ কামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন যাবৎ নানাবিধ দূর্নীতি করে আসছেন ।
বিগত ৮ মে ২০১৫ মুসর্লিমিয়া মাদ্রাসার পুরাতন ভবনের টিন দিয়ে নিজের বসতঘরের কাজ করার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা থেকে টিন নেওয়ার সময় জনতার হাতে সুপারের দুই ছেলে হাতেনাতে আটক হয় । এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে ৫নং ওয়ার্ড শামিম মেম্বার টিনগুলো উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে গচ্ছিত রাখেন ।
অপরদিকে নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার কথা থাকলে ও সুপার কামাল উদ্দিন বিভিন্ন শ্রেনী বাবদ ফি ধার্য করেন এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী বাঁধা প্রদান করলে সুপার কৌশলে জানুয়ারীর ৩ তারিখে টাকার বিনিমলে বই বিতরন করতে থাকেন । একপর্যায়ে স্থানীয় গনমান্য ব্যাক্তিবর্গসহ মাদ্রাসার সাবেক ম্যানেজিং কমিটি টাকাগুলো উদ্ধার করে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফেরৎ দিয়ে দেন ।
তবু ও থেমে নেই সুপারের অনিয়ম । শিক্ষার্থীদের কে উপবৃত্তি দেয়ার নাম করে জনপ্রতি ২০০টাকা করে নেয়ার অভিযোগ ও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।
গত শুক্রবার উপজেলার সাদাপোল এলাকার ডাঃ আজহার উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা নেওয়ার জন্য মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আসলে মাদ্রাসা সুপারের ব্যাপক অনিয়মের চিত্র ফুটে ওঠে ।
দাখিল নবম শ্রেনীর মোসাঃ নারগিস আক্তার সহ একাধীক শিক্ষার্থীরা জানান, উপবৃত্তি দেয়ার কথা বলে সুপার সাহেব ২০০টাকা করে নিয়েছেন কিন্তু তিনি উপবৃত্তির চার্টে আমার নাম ঠিক রাখলে ও অন্য আরেকজনার ছবি দিয়েছেন আর আজ আবার এসে দেখি চার্টে আমার কোনো নামই নেই ।
সূত্রে আরো জানা যায়, সুপার কামাল উদ্দিন অত্র মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে নকলের সূযোগ দেয়ার কথা বলে ২০০টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।
মাদ্রাসা সুপারের ভর্তি বানিজ্য, ফরম ফিলাপ বানিজ্যসহ যাবতীয় অনিয়মে যারাই বাঁধা হয়ে দাড়ান সুপার তাদের নামে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন বলে ও জানা গেছে । গত ১৪ জানুয়ারী সুপারের কন্যাকে অপহরনের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে আঃ মোতালেব (৫৫) নামের এক বৃদ্ধ কৃষকের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয় । অবশেষে সুপার কন্যা সাদিয়া (১৭) এর জবানবন্দির ভিত্তিতে মুক্তি মেলে কৃষকের ।
অপরদিকে মাদ্রাসার সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জানান, সুপারের এসকল অনিয়মে বাঁধা প্রদান করি বলে তিনি কৌশলে পূর্বের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে চরফ্যাশন উপজেলার মাওঃ রফিকুল ইসলাম নামের তার নিজের এক আত্মীয়কে সভাপতি করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে নির্বিঘেœ নিজের দূর্নীতি অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন ।
সুপার নিজে প্রায় ২০দিন ও তার ছোট ভাই মোঃ জামাল উদ্দিন প্রায় দুই বছরের মত এলাকার বাইরে থাকলে ও তাদের স্বাক্ষর জাল করে গত ফেব্রুয়ারী মাসের বেতন ভাতা উত্তোলনের চেষ্টা করা হলে বাঁধার মূখে অবশেষে তা ভেস্তে যায় । এসকল অব্যাহত অনিয়ম দূর্নীতি করে ও সুপার মাওঃ কামাল উদ্দিন এখনো কিভাবে বহাল তরিয়তে আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কোন বিধি আমার হাতে নেই এটা সম্পূর্ন ম্যানেজিং কমিটির ব্যাপার ।
ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বাক্ষর জাল সম্পর্কে মাওঃ কামাল উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার কেরানী অন্ধ বৃদ্ধ লোক তাই হয়তো তিনি ভূল করেছেন বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং তার কাছে বর্তমান সভাপতির মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি নং দিতে রাজি হননি ।
একজন মাদ্রাসা সুপার দূর্নীতি করে কিভাবে বারবার পার পেয়ে যান ? আর এমন দূর্নীতিগ্রস্থ শিক্ষকদের কাছ থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি শিখবে ? এ সকল দূর্নীতি রুখার কি কেউ নেই ? এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় অভিভাবকগন সহ স্থানীয় সাধারন জনতা ।