মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » চরফ্যাশন | শিরোনাম | সর্বশেষ » ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে ভোলার চরফ্যাশনের ১২টি ইউনিয়নে বাড়ছে সহিংসতা
ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে ভোলার চরফ্যাশনের ১২টি ইউনিয়নে বাড়ছে সহিংসতা
লালমোহন বিডিনিউজ : ভোলার চরফ্যাশনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ১২টি ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সহিংসতা বেড়েই চলছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের দ্বারা প্রতিনিয়ত বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের কর্মীদের প্রচারণায় বাঁধা, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকী, প্রচার মাইক ও প্রচার রিকশা ভাঙচুর ও কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
পাশাপাশি আবুবকরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্তৃক ইসলামী আন্দোলন মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর উপর চরফ্যাশন নির্বাচন অফিসের নিচে প্রকাশ্য দিবালোকে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও এলাকা সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন চরফ্যাশনের রসুলপুর, হাজারীগঞ্জ, এওয়াজপুর, কলমী ও আবুবকরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীরা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছে। প্রচার কর্মীদের মারধর, রিকশা ও মাইক ভাঙচুর করে এসব ইউনিয়নের ভোটারদের আতঙ্ক করে তুলছে।
গত ৪মার্চ হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম হাওলাদারের কর্মীরা বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীন আলমের বাসভবনে ভাঙচুর চালায় এবং তার কর্মী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক নেছার উদ্দিনের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন শোরুমে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। কয়েকদিন আগে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি ফিরোজ ছৈয়ালের ওপরও হামলা চালায় ছাত্রলীগের কর্মীরা।
গত ৫মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রসুলপুর ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছালাহ উদ্দিন মিয়ার প্রচার কর্মী ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক মো. ইউনুছকে মারধর করে ও একটি মাইক ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যানপ্রার্থীর কর্মীরা।
আওয়ামী লীগ কর্মীরা ৬মার্চ রসুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপ্রার্থী ছালাহ উদ্দিন মিয়ার দুটি প্রচার রিকশা ভাঙচুর করে ও দুটি রিকশাসহ প্রচার মাইক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
একই দিন রাত ৯টায় রসুলপুরের আওয়ামী লীগ কর্মীরা ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আ. মোতালেব মিয়াকে, একই ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি আ. জলিলকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
সোমবার সকালে মোতালেব মিয়ার মুদি দোকান ও আ. জলিলের বালু ব্যবসার দোকানটি আওয়ামী লীগ কর্মীরা বন্ধ করে দেয়।
সোমবার এওয়াজপুর ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী মোস্তফা কামালের ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার নিয়ে দুপুর ১টায় তার ছোট ভাই আ. রহমান ৫নং ওয়ার্ডে টানাতে গেলে আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুব আলম খোকনের নির্দেশে আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাকে কুপিয়ে আহত করে ও বেলা আড়াইটায় মোস্তফা কামালের প্রচার মাইক ও রিকশাা ভাঙচুর করে।
স্থানীয়রা আ. রহমানকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে।
গতকাল আছরবাদ চরকলমী ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিমের প্রচারণায় বাঁধা দেয় ইউনিয়ন আঙয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতা বশির আহমেদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কর্মীরা।
এছাড়া গত ৫মার্চ সকাল ১১টায় আবুবকরপুর ইউনিয়নের ইসলামী আন্দোলন মনোনিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী আ. কাইউমকে আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজ জমাদার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাচন অফিসের নিচতলায় এলোপাতাড়ি মারধর করে ও আবুবকরপুরের জনতাবাজারে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী হাবিবুর রহমানের পথরোধ করে পকেট থেকে ২হাজার ২‘শ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় হাবিবুর রহমানের মোটর সাইকেল চালককে মারধর করে।
এসব ঘটনায় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল বাশার ও স্ব-স্ব রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ভোলা জেলা নির্বাচন অফিসার হেলাল উদ্দিন খান জানায়, চরফ্যাশন উপজেলায় প্রথম ধাপে ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও হাইকোর্টে মামলার কারণে মুজিবনগর ইউনিয়নের নির্বাচন ৩ মাস স্থগিত হলে ৯টি ইউনিয়নে নির্বাচন চলছে। দ্বিতীয় ধাপের ঘোষিত ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে নুরাবাদ ইউনিয়নের ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাসের কারণে ও আমিনাবাদ ইউনিয়নে সীমানা জটিলতার কারনে এ দুটি ইউনিয়নে নির্বাচন না হওয়া দ্বিতীয় ধাপে চরফ্যাশনে ৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন চলছে।
ইতিমধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তিনি সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে লালমোহন বিডিনিউজকে জানিয়েছেন।